তাজা খবর
আপনাদের জন্য আমরা আছি
হালকা হিমেল হাওয়ার দাপটের মধ্যেও পটুয়াখালীর কলাপাড়া বাজার বেশ সরগরম। সকাল-সন্ধ্যা বা বিকেল নেই, মাথায় ইলিশের ঝাঁপি নিয়ে ব্যাপারীরা হাটে হাজির হচ্ছেন। আগের বছরগুলোর এই সময়ের তুলনায় এবার দাম প্রায় অর্ধেক। শুধুই কী দাম, আকার কিংবা ওজনেও কোনো অংশে কম নয়। এক মাস ধরে বাজারে আট শ গ্রাম থেকে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশই বেশি।
সাধারণত শীতে এত ইলিশ ধরা পড়ে না। তবে এবার ব্যতিক্রম। মূলত তিন কারণে এবার এত ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের নতুন নতুন অভয়াশ্রম এলাকা ঘোষণা করা ও সমুদ্রে ৬৫ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা কয়েক বছর ধরে নিয়ম করে পালন করা। আর অবৈধ বেহুন্দি জাল জব্দে কড়াকড়ি আরোপ করায় শীতকালে এত ইলিশ ধরা পড়ছে বলে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
তবে এই সময়ের ইলিশের স্বাদ কম হয় বলে বদনাম আছে। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, শীতের এই সময়ে ডিমওয়ালা ইলিশের স্বাদ বর্ষার সময়ের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।গত শনিবার সরেজমিনে কলাপাড়া বাজার থেকে শুরু করে অলিগলি, সড়কের দুই পাশ থেকে শুরু করে বাসস্ট্যান্ড—সবখানে শীতের ইলিশের রাজত্ব চোখে পড়ল। তবে এই চিত্র শুধু বঙ্গোপসাগর ও পায়রা নদী দিয়ে ঘেরা পটুয়াখালী জেলার নয়, উপকূলের বেশির ভাগ জেলায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এবারের শীতে অস্বাভাবিক পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। সাধারণত শীতের এই সময়ে দেশের প্রধান ইলিশ অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টন ইলিশ ধরা পড়ে। এ বছর তা এক লাফে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টনে পৌঁছে গেছে।
শুধু উপকূলীয় জেলাগুলোতেই নয়, রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে শুরু করে মিরপুর-মোহাম্মদপুরের বাজারগুলোতেও এই সময়ে ইলিশ খুব বেশি পাওয়া যেত না। গেলেও দাম ছিল চড়া। এক মাস ধরে এসব বাজারে তো বটেই, রাজধানীর সুপারশপ হয়ে অলিগলিতে হকারের টুকরিতে ইলিশ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে মৎস্য সম্পদবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবে, দেশে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের আকার ও ওজন বেড়ে যাচ্ছে। তবে এত দিন এই হিসাব করা হতো মূলত ইলিশের ভরা মৌসুমে ধরা পড়া মাছ পর্যবেক্ষণ করে। বর্তমানে দেশে ইলিশের গড় ওজন ৮৫০ থেকে ৯০০ গ্রাম। আর শীতের মৌসুমে ইলিশের গড় ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম। তবে এক মাস ধরে গড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ধরা পড়ছে। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমের প্রায় সমান ওজনের ইলিশ ধরা পড়ছে। সংস্থাটির হিসাবে, জানুয়ারিতে ইলিশের দৈনিক উৎপাদন আগের বছরগুলোর তুলনায় গড়ে ২৬৬ শতাংশ বেড়েছে।
জানতে চাইলে ওয়ার্ল্ড ফিশের ইকো ফিশ প্রকল্পের প্রধান ও মৎস্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে সরকার একের পর এক ইলিশের নতুন নতুন অভয়াশ্রম এলাকা ঘোষণা করা ও সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার পর ইলিশের উৎপাদনে ওই গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তনটি এল। এ ছাড়া মৎস্য অধিদপ্তর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে অবৈধ বেহুন্দি জাল জব্দ করায় শীতকালে এত ইলিশ ধরা পড়ল।’
উৎপাদন হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ইলিশের দামও গত এক মাসে অনেক কমে গেছে। গত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে ইলিশের ভরা মৌসুমেও এক কেজি ইলিশের দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ছিল। ডিসেম্বরে তা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু জানুয়ারিতে হঠাৎ করে ইলিশ আহরণ বেড়ে যাওয়ার ফলে দাম কমতে থাকে। বরগুনার আমতলী, পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও কুয়াকাটার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৭ সালে সরকার বরিশালের হিমলা থেকে মেহেন্দীগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করার পর ইলিশের উৎপাদন দ্রুত বাড়তে শুরু করে। অভয়াশ্রমটি বাংলাদেশের ইলিশের প্রজননের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল। কারণ, ওই এলাকায় আড়িয়াল খাঁ, মেঘনা ও কালাবদর নদীর মিলনস্থল। ওই এলাকার পানি ইলিশের প্রজনন ও জাটকা বড় হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আনিসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার পর ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। ওই সময় সাগরে থাকা ছোট ইলিশ মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেগুলো পরিণত হয়ে এখন নদীতে আসছে। ফলে এখন আমরা শীতের সময়েও বড় ইলিশ পাচ্ছি। এ ছাড়া ছয়টি অভয়াশ্রম ও জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করার একটি পুঞ্জীভূত প্রভাব আমরা পেলাম। এই অর্জন ধরে রাখতে এ বছরও সাগরে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।’
করোনাভাইরাসে লারণে জন্মদিনের পার্টি বাতিল, আত্মহত্যার হুমকি
জন্মদিন উপলক্ষে পার্টির আয়োজন করেছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের বাসিন্দা ওয়াং। কিন্তু বিধি বাম! তাঁর সেই উৎসবের আয়োজনে বাদ সাধে প্রশাসন। পার্টি আয়োজন করতে না পেরে ক্ষুব্ধ ওয়াং শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার হুমকিই দিয়ে বসেছেন!
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের চংকিং শহরের বাসিন্দা ওয়াং এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৯ বছর বয়সী ওয়াং নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে রাস্তায় নেমে আসেন। নিজের কোমরে আতশবাজি বেঁধে হাজির হন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের সামনে। শুধু তা-ই নয়, গায়ে পেট্রল ঢেলে এক হাতে লাইটার নিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিতে থাকেন তিনি। মূলত হুমকি দিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জন্মদিনের পার্টি করার অনুমতি আদায় করাই তাঁর লক্ষ্য ছিল।
চংকিং প্রশাসন অবশ্য এমনি এমনি জন্মদিনের পার্টি নিষিদ্ধ করেনি। করোনাভাইরাসের প্রভাবে এরই মধ্যে চীনে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে তাই গত সপ্তাহে উৎসব অনুষ্ঠান (যেখানে বেশি মানুষের সমাগম হয়) সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। এ কারণে ওয়াংকে তাঁর জন্মদিনের পার্টি বন্ধ করার নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি ওয়াং।তবে এমন কাণ্ডে বরং হিতে বিপরীতই হয়েছে ওয়াংয়ের। জানা গেছে, পার্টির অনুমতি দূরে থাক, উল্টো শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওয়াংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
Subscribe to:
Posts (Atom)